তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে হালকা যানবাহন চলাচল

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে হালকা যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে
[ভালুকা ডট কম : ২৩ জুলাই]
গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক প্রায় ফাঁকা ছিল। বিভিন্ন স্টপেজে ব্যাটারী ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলাচল করতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও পিকাপ ভ্যানে যাত্রী বহন ও পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যান, ট্রাক, পিকাপ চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে সাধারণ মানুষ নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হচ্ছে। কাঁচা বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। গায়ে গা লেগে কেনা-বেচা হচ্ছে। যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন তাদের অনেকের মুখে মাস্ক রয়েছে, অনেকের মুখে মাস্ক থাকলেও থুতনির নিচে মাস্ক রেখে চলাচল করছে। শুক্রবার (২৩ জুলাই) লকডাউনের প্রথম দিনে এমনই চিত্র দেখা গেছে সড়ক-মহাসড়কে।

টাঙ্গাইল, নেত্রকোণা, ময়মনসিংহ থেকে অটোরিক্সায় ভেঙ্গে ভেঙ্গে যাত্রীরা গাজীপুর অতিক্রম করে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছেন। সড়ক মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্বপালন করতে দেখা গেছে।

গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা এলাকায় ভবন নির্মাণে ঢালাইয়ের কাজ করেন রুবেল ও শামীম। তাদের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার লেঙ্গুদাসপাড়া গ্রামে। তারা জানান, শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। বেলা সাড়ে ১২টায় গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা পৌছেন। ঘন ঘন অটোরিক্সা, ভ্যান, সিএনজি পরিবর্তন করে দু’জনে ২ হাজার টাকার বেশি ভাড়ায় এ পর্যন্ত পৌঁছেন। ভবন নির্মাণের চুক্তিবদ্ধ কাজ থাকায় জীবিকার তাগিদে তাদেরকে বাড়ি থেকে বের হতে হয়েছে।

ফাহিমা বেগম ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ী থেকে বৃহষ্পতিবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার এলাকায় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। মানুষের মুখে শোনেছেন রোববার থেকে লকডাউন। তাই শুক্রবার সকালে ১১টার দিকে গাজীপুর চৌরাস্তা বোনের বাড়িতে বেড়ানোর উদ্দেশে রওয়ানা হয়ে ১০ কিলোমিটার পথ অটো, সিএনজি দিয়ে অতিক্রম করেন। মাওনা চৌরাস্তা এসে জানতে পারেন অঅজ থেকেই লকডাউন চলছে।

শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় কথা হয় আটো চালক জাহিদুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, ঘরে খাবার নেই। ঈদের আগেও লক ডাউন ছিল। তখন গাড়ি নিয়ে বের হয়নি। ঈদের পরেও কঠোর লক ডাউন দিয়েছে সরকার। ঘরের বাইরে বের হওয়ার নিষেধ থাকলেও পেটের দায়ে বের হতে হয়েছে। আজকেই সড়কে থাকব। যা আয় হয় তা দিয়ে ৫/৭ দিন পরিবার নিয়ে কোনো মতে চলতে পারব।

রিাম আক্তার (২০)। চাকরি করেন নতুন বাজার এলাকার ইসরাক টেক্সটাইলে। ছোট বোন সীমা আক্তারকে নিয়ে আত্নীয়ের বাড়ীতে বেড়াতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, শুনছি লক ডাউন থাকলেও গাড়ী চলাচলা করবে। এখন বাসা থেকে বের হয়ে দেখি কোনো গাড়ি চলাচল করছে না। এখন বাসায় ফিরেও যাওয়ারও উপায় নেই। ছোট বোনকে নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই গন্তব্য যেতে হবে। মাওনা চৌরাস্তা থেকে অন্যান্য দিন নতুন বাজার ১০ টাকা ভাড়া। আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মিন্টু ও কবির ঢাকার এয়ারপোর্ট এলাকায় মেরিকো বাংলাদেশ নামক একটি প্রসাধনী কোম্পানীতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকুরী করেন। লকডাউনেও তাদের ছুটি হয়নি। তাই শুক্রবার ভোরে বাসা থেকে বের হয়ে দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তা পৌঁছেন। মহাসড়ক ব্যবহার না করে বিভিন্ন সংযোগ সড়ক দিয়ে মাওনা চৌরাস্তা পৌঁছতে তাদের একেকজনের ১৩’শ টাকা ভাড়া গুণতে হয়েছে। এয়ারপোর্ট পর্যন্ত যেতে কত টাকা খরচ হয় সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত নয়।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দুবাসিয়া থেকে এসেছন আশিকুর রহমান। শ্রীপুর পৌরসভার প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলে মেডেকেল এসিস্ট্যান্ট পদে চাকরি করেন। বেলা ১২ টায় মাষ্টারবাড়ী বাস স্ট্যৗান্ডে কথা হলে তিনি জানান, লক ডাউনে এভাবে গাড়ী বন্ধ থাকবে তা বুঝতে পারি নাই। বাড়ী থেকে এ পর্যন্ত আসতে ৪০০ টাকা খরচ হয়েছে। অন্যা সময় ১৫০ টাকা দিয়ে আসতে পারি।

গাজীপুর মহানগরের জয়দেবপুর চৌরাস্তায় সাথে ব্যাগ, স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করছেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা বাজার এলাকার জৈনুদ্দিন শেখ। চাকরি করেন ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে। তিনি বলেন, আগামীকাল অফিস খোলা থাকার কথা রয়েছে। লক ডাউন থাকায় ভোরে বাড়ী থেকে রওনা করে তিন গুণ ভাড়া দিয়ে এ পর্যন্ত এসেছি। এখন ঢাকা যাওয়ার জন্য হাতে সে পরিমান টাকাও নেই, সড়কে গাড়ীও পাচ্ছি না। যেসব বাহন ঢাকা যেতে চাচ্ছে, তারা তিনগুণ, চারগুণ ভাড়া চাচ্ছে।

সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। বসানো হয়েছে পুলিশ চেকপোস্ট।  কিছু বাস হাইওয়েতে চলাচল করতে দেখা গেছে, তবে বাসগুলো দূরপাল্লার। তারা যাত্রী নামিয়ে খালি গাড়ি নিয়ে গন্তব্যে ফিরে যাচ্ছে। রাতে যারা গ্রাম থেকে রওনা হয়েছিলেন তারা চন্দ্রা ত্রিমোড়ে নেমে পরিবহন না পেয়ে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে। অপরদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে থেকে পরিবহন না পেয়ে কিছু মানুষকে পায়ে হেঁটে রওনা হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকর করতে সকল বিভাগের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম তরিকুল ইসলাম বলেন, লকডাউন কার্যকর করতে জেলাজুড়ে ভ্রাম্যমান আদালতের ১০টির বেশি টীম কাজ করছে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকার বাইরে বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই