তারিখ : ২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরের অফিসে পারসেন্টেজ ছাড়া ফাইল নড়ে না

রাণীনগরের হিসাবরক্ষণ অফিসে নির্দিষ্ট পারসেন্টেজ ছাড়া ফাইল নড়ে না
[ভালুকা ডট কম : ২২ এপ্রিল]
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে নির্দিষ্ট পরিমাণ পারসেন্টেজ ছাড়া কোন ফাইল নড়ে না। পারসেন্টেজ না দিলেই নানা বাহানায় দিনের পর দিন ঘুরতে হয় নিজের পাওনা অর্থের বিলের কাগজপত্রাদি পেতে। বর্তমানে এই অফিসে প্রতিটি বিলের কাজেই পারসেন্টেজ দেয়া অনেকটাই বাধ্যতামূলক হয়ে দাড়িয়েছে। সবচেয়ে বেশি গলা কাটা হয় সরকারি চাকরী শেষে পেনশনে যাওয়া অসহায় ব্যক্তিদের। শাখের করাতের এই গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের হাত থেকে রেহাই চান উপজেলাবাসী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার এক প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা বলেন আমার বিভিন্ন প্রশিক্ষণের সম্মানীর বিল উত্তোলনের জন্য হিসাবরক্ষণ অফিসে গেলে কোন কারণ ছাড়াই বিলের শতকরা ১০ভাগ উৎকষ দাবী করা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে পারসেন্টেজ কমে শতকরা ৮ভাগে আসে। এরপর বিষয়টি আমার দপ্তর প্রধানকে জানালে তার হস্তক্ষেপের কারণে সর্বশেষ শতকরা ৫ভাগ পারসেন্টেজের শর্তে তারা আমার ফাইল গ্রহণ করেন। মনে হয় এই দেশ একটি মগেরমুল্লকে পরিণত হয়েছে। হিসাবরক্ষণ অফিসের কাজই হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন বিল, বেতন ও সম্মানীর ফাইলগুলো দেখা কিন্তু তারা অফিসে আসা প্রত্যক মানুষের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে পারসেন্টেজ নেন এটি কি কোন সরকারী নিয়মের মধ্যে পড়ে। এমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার আরেক কর্মকর্তা বলেন আমার সরকারী পাওনা টাকার বিলের কাজ করার জন্য হিসাবরক্ষণ অফিসে নির্দিষ্ট পরিমাণ পারসেন্টেজ দিতে হবে এটি কেমন কথা। পারসেন্টেজ না দিলেই দিনের পর দিন ভোগান্তি ও আর হয়রানীর শেষ থাকে না। পারসেন্টেজ না দিলেই প্রতিটি ফাইলে ভুল ধরে দিনের পর দিন ফেলে রাখা হয়। আমরা হিসাবরক্ষণ অফিসের কাছে জিম্মি। হিসাবরক্ষণ অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আবার আমাদের নতুন করে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে। যেহেতু প্রতিটি বিল পাওয়ার জন্য হিসাবরক্ষণ অফিসে যেতে হয় তাই তাদের কথামতো না চললে পরবর্তিতে আরো বেশি হয়রানীর শিকার হতে হবে বলে কেউ প্রতিবাদও করার সাহস পায় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা থেকে বদলী হওয়া এক কর্মকর্তা বলেন পারসেন্টেজ না দেওয়ার কারণে আমার অফিসের এক কর্মচারীর বিলের ফাইল হিসাবরক্ষণ অফিসে আটকে রাখা হয়েছিলো। অনেক অনুরোধ করার পরও তারা সেই ফাইল না ছাড়ার কারণে আমি হিসাবরক্ষণ অফিসে তালা ঝুলানোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছিলো। বর্তমানে ওই হিসাবরক্ষণ অফিসে যারা আছেন তারা মানুষ নয় তারা মানুষ নামে রক্তচোষা নরপশু। এদের প্রকাশ্যে দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি দিয়ে এক ইতিহাস সৃষ্টি করতে হবে যা দেখে আগামীতে হয়তো বা এমন অনিয়ম আর দুর্নীতি করা থেকে অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিরত থাকবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেনশনে যাওয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারি শিক্ষক জানান উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস বর্তমানে কসাইখানায় পরিণত হয়েছে। এই অফিসের অডিট শাখাটি ঘুষের আঁতুর ঘরে পরিণত হয়েছে। কোন কারণ ছাড়াই তাদের চাহিদা মতো পারসেন্টেজ না দিলেই ফাইলে হাজারটা ভুল আর ত্রুটিতে ভর্তি থাকে আর চাহিদা পূরণ করলে সেই সকল ভুল-ত্রুটি নিমেষেই সঠিক হয়ে যায়। পেনশনের কাগজপত্রাদি ঠিকঠাক করার জন্য কাউকে অর্ধলাখ আবার কাউকে লাখ টাকার ঘুষ গুনতে হয়। আর ফাইল ঠিকঠাক করার জন্যই বাংলাদেশ সরকার হিসাবরক্ষণ অফিস নামক এই দপ্তর চালু করেছেন তাহলে কেন বাধ্যতামূলক পারসেন্টেজ কিংবা ঘুষ দিতে হবে।  

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা চন্দন কুমার প্রামাণিক মোবাইল ফোনে জানান তিনি যে ভাবে সেবা দিয়ে আসছেন তিনি যখন থাকবেন না তখন উপজেলাবাসী বুঝতে পারবেন। পারসেন্টেজ নেওয়ার এমন অভিযোগ মিথ্যে। তবে অফিসে কিছু অধিনস্ত ব্যক্তিরা আছেন হয়তো বা তারা না বুঝে এই ধরণের কর্মকান্ড করতে পারে। আপনি (সাংবাদিক) অফিসে আসেন আপনার সামনে ডেকে ওই ব্যক্তিদের শাসন করে দিবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকার বাইরে বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৯৩৯১ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই