বিস্তারিত বিষয়
গৌরীপুরের কৃতি সন্তান স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত
গৌরীপুরের কৃতি সন্তান চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মুকতাদির স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত
[ভালুকা ডট কম : ২১ ফেব্রুয়ারী]
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মুক্তিযোদ্ধা ডা. এ. কে. এম. এ মুকতাদির পাচ্ছেন স্বাধীনতা পদক ২০২০। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাধীনতা পদক মনোনীত হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ১ প্রতিষ্ঠানকে ২০২০ সালের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে সরকার।
পদক মনোনীত অন্যরা হলেন স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে পদক পাচ্ছেন- গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক), মরহুম কমান্ডার আব্দুর রউফ, মরহুম মো. আনোয়ার পাশা ও আজিজুর রহমান। চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. মো. ওবায়দুল কবির চৌধুরী, সাহিত্যে এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ (মুক্তিযোদ্ধা) এবং সংস্কৃতিততে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদার স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন। আর শিক্ষায় ভারতেশ্বরী হোমস প্রতিষ্ঠান হিসেবে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছে। আগামী ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনাতয়নে এ পুরস্কার দেবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদিরের বিনামূল্যে চিকিৎসা কার্যক্রমের জন্য ইতিপূর্বে তিনি ভারতের তিরুচিরাপল্লীতে এ্যাসোসিয়েশন অফ কমিউনিটি অফথ্যালমলোজি ইন ইন্ডিয়া আয়োজিত অনুষ্ঠানে লাইফ টাইম এ্যাচিভমেন্ট এ্যাওয়ার্ড, চক্ষু চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ্যাওয়ার্ড, ২০০২সালে লায়ন্স এফ্রিসিওয়ান এ্যাওয়ার্ড, ২০০৫সালে এএফএও কর্তৃক ডিসটিংগোয়িং সার্ভিস এ্যাওয়ার্ড, একেদাস এ্যান্ডওমেন্ট এ্যাওয়ার্ড, ২০১৫সালে ভারতে গোল্ডমেডেলসহ দেশ ও বিদেশে ১৯টি এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ.কে.এম.এ মুকতাদির ও তারই সহধর্মিণী ডা. মাহমুদা খাতুনের সহযোগিতায় নিজ জন্মভূমি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে ২০০৪সনে গড়ে তোলেন নিজ নামে ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতাল।
বিনামূল্যের চক্ষু শিবিরে বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত মানুষ ছুটে আসছেন এ চক্ষুশিবিরে। ডা. মুকতাদির ১৯৭৬সন থেকে ২০০৩ইং সন পর্যন্ত গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন ক্যাম্পে ৯৭ হাজার মানুষের অপারেশন সম্পন্ন করেন। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পরে বিনামূল্যে প্রায় ২০হাজার রোগী চোখের দৃষ্টি ফিরে পেয়েছেন। দৈনন্দিন অপারেশন করা হয়েছে ছানি অপারেশন ৩৭হাজার ৩শ ৪৩জন, নালি অপারেশন ৪হাজার ৩০২জন, চোখের মাংস বৃদ্ধির অপারেশন ৮৩৮জন, গ্লোকোমার ৬৬৪জন, শিশুদের নেত্রনালির ১হাজার ১৬৪, চোখে পাথর সংযোজন ৬১৮জন, চোখের পাতার অপারেশন ৭২৪জন, গুটি অপারেশন ৮৭৫জন, টিউমার অপারেশন ৫৮৩জন, টেরা চোখ অপারেশন ৭৩জন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গৌরীপুরের সন্তান মুক্তিযোদ্ধা ডা. একেএমএ মুকতাদির ২০০৪সনের ২৬মার্চ মাত্র ১০শয্যা নিয়ে নিজ গ্রামে এ হাসপাতালের যাত্রা শুরু করেন। সময়ের প্রয়োজনে ক্রমে ক্রমে আরও বর্ধিত করা হয় ৩০টি শয্যা। চাহিদার প্রয়োজনে ৪তলা ভবনে নতুনভাবে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধার কলবরে ১০০শয্যার নতুন হাসপাতালটি এখন মানুষের কল্যাণে নিবেদিত। হাসপাতালে ভিআইপি রোগীদের জন্য ৩টি এসি কেবিন, ৬টি নন এসি কেবিন, মহিলাদের পৃথক নামাজখানা, রেস্ট রুম, ষ্টাফ ক্যান্টিন, হাসপাতালের আগত রোগী ও আত্মীয় স্বজনের জন্য একটি পৃথক ক্যান্টিন, ডাক্তারদের রেস্ট রুম, ২টি অপারেশন থিয়েটার, মনিটরের মাধ্যমে অপারেশন থিয়েটারের দৃর্শ্য সরাসরি আত্মীয় স্বজনদের দেখার সুবিধা, প্রতিটি ফ্লোরে আনন্দ বিনোদনের জন্য রঙিন টেলিভিশন। সার্বক্ষনিক ৩জন মেডিকেল অফিসার রোগীদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। প্রতি শুক্রবার সার্জিক্যাল টিমের মাধ্যমে ল্যান্স সংযোজন, ছানি অপারেশন ব্যবস্থা। আগত রোগীদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে ২১জন কর্মকর্তা-কর্মচারীও। হাসপাতালে গড়ে তোলা হয়েছে অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার। হাসপাতালেই ইসিজি, রক্ত পরীক্ষা, ডায়াবেটিকস, প্রেসার, বায়োমেট্টি, এসপিটিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা। বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এ.কে.এম এ মুকতাদির জানান, জীবনের সমস্ত অর্জন দিয়ে তিলে তিলে এ হাসপাতালটি গড়ে তোলেন। দেশের রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়ে বিদেশী রোগীরাও এক সময় এদেশে আসবে।
৪ একর জমির মাঝখানে হাসপাতাল ভবন, সামনে দর্শনার্থীদের জন্য নয়নাভিরাম পার্কের ব্যবস্থা। পাশেই বায়তুল আমান জামে মসজিদ। একটু এগিয়ে গেলেই দেখা যাবে চোখে জুড়ানো হরিণের পাল। পুরো হাসপাতালে ধাপে ধাপে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে দেশী-বিদেশী কাচ, টাইলস, সৌন্দর্যবর্ধন চিত্র।
জানা যায়, স্বাধীনতা পদক এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।#
সতর্কীকরণ
সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।
কমেন্ট
ব্যাক্তিত্ব বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- এনামুল হক বাবুলের মহাত্মাগান্ধী পদক লাভ [ প্রকাশকাল : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৫.০০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁর কছির উদ্দিন আকন্দ চান রাষ্ট্রীয় মর্যাদা [ প্রকাশকাল : ১৫ জুন ২০২২ ০৩.০০ অপরাহ্ন]
- মাহাতো সম্প্রদায়ের ইউএনও সুশান্ত কুমার মাহাতো [ প্রকাশকাল : ২৫ আগস্ট ২০২১ ০৪.১৬ অপরাহ্ন]
- ভালুকার সাবেক এম পি অধ্যাপক ডাঃ এম আমান উল্লাহ [ প্রকাশকাল : ১১ মার্চ ২০২১ ১০.০০ অপরাহ্ন]
- গৌরীপুরের ডা. মুকতাদির পেলেন স্বাধীনতা পদক [ প্রকাশকাল : ৩০ অক্টোবর ২০২০ ০৫.২৫ অপরাহ্ন]
- রাজশাহী কচিপাতা থিয়েটারের একজন কর্ণধার তাজুল ইসলাম [ প্রকাশকাল : ১০ জুন ২০২০ ০৭.৫০ অপরাহ্ন]
- মানুষ মানুষের জন্য প্রমাণ দিলেন-এম.এ.ওয়াহেদ [ প্রকাশকাল : ০৯ এপ্রিল ২০২০ ০৬.০০ অপরাহ্ন]
- গৌরীপুরের সৎ ও নিষ্ঠাবান শিক্ষা অফিসার মনিকা [ প্রকাশকাল : ১৪ মার্চ ২০২০ ০৬.৩৩ অপরাহ্ন]
- বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ নওগাঁর আমীন উদ্দীন [ প্রকাশকাল : ০৮ মার্চ ২০২০ ০৭.০৮ অপরাহ্ন]
- গৌরীপুরের কৃতি সন্তান স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত [ প্রকাশকাল : ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ০৫.০০ অপরাহ্ন]
- বাংলাদেশ ব্যাংকের জিএম পদে উন্নীত নান্দাইলের রতনের [ প্রকাশকাল : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫.৫৫ অপরাহ্ন]
- শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মুশফিকের মমেকে সহকারী অধ্যাপকে পদোন্নতি [ প্রকাশকাল : ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ১০.০০ পুর্বাহ্ন]
- কিংবদন্তি চিকিৎসক নূরুন্নাহার ফাতেমা বেগম [ প্রকাশকাল : ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৮.০৭ অপরাহ্ন]
- বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন নিবেদিত কর্মী [ প্রকাশকাল : ০৫ নভেম্বর ২০১৮ ১২.০১ অপরাহ্ন]
- ভালুকা থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হাজী রফিকের বর্ণাঢ্য জীবন [ প্রকাশকাল : ১৫ জুলাই ২০১৮ ০১.০০ অপরাহ্ন]