তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে তীব্র তাপদাহে কদর বেড়েছে তালশাঁসের

রাণীনগরে তীব্র তাপদাহে কদর বেড়েছে তালশাঁসের,তালগাছের বাগান গড়ে তোলার আহবান
[ভালুকা ডট কম : ০২ জুন]
সারা দেশের সঙ্গে নওগাঁর উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারী আকারের তাপদাহ। গত কয়েকদিন যাবত নওগাঁ ও তার আশেপাশের অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৯ডিগ্রিতে অবস্থান করছে। প্রতিনয়তই তাপমাত্রার পারদ উপরের দিকে উঠছে। এমন তীব্র তাপদাহে একটু স্বস্তি পেতে তালগাছের কচি ফলের নরম ও সুমিষ্ট তালশাঁসের কদর বেড়েছে কয়েকগুন।

গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালের শাঁস অনেক উপকারী। এর রয়েছে অনেক গুনাগুন। তাই জৈষ্ঠ্যের এ মধু মাসে বাজারে নানা ফল ওঠলেও নওগাঁর রাণীনগরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে তালের শাঁস। গ্রীষ্মের এই দিনে তালের শাঁস খুবই জনপ্রিয় একটি খাবারে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে এর চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুন। তবে দিন দিন তালগাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সড়ক প্রশস্তকরন করাসহ সংস্কার কাজের অজুহাতে কেটে ফেলা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ও বজ্রপাত প্রতিরোধক এই তালগাছ। যেহেতু তালগাছ বড় হতে অনেক সময় লাগে তাই সরকারি ভাবে যে তালবীজগুলো নতুন করে বপন করা হচ্ছে সেগুলোর সুফল এই প্রজন্ম না পেলেও আগামী প্রজন্ম পাবে। তাই সড়ক সংস্কারের সময় গাছ রেখেই সংস্কার করা প্রতি আহবান জানিয়েছে সচেতন মহল।    

বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ডগুলো, বিভিন্ন জনমুখর মোড় ও অলিতে গলিতে তালের শাঁস বিক্রি করে অনেক হত দরিদ্র মানুষ মৌসুম ভিত্তিক জীবিকা নির্বাহ করছেন। নরম তালেরশাঁস কেতে যেহেতু অনেক সুস্বাদু ও মিষ্টি তাই প্রথম দিকে মৌসুম ভিত্তিক ব্যবসায়ীরা একটু চড়াদামে বিক্রি করছেন। বর্তমানে চারটি তালেরশাঁস কেউ ১৫টাকা আবার কেউ ১২টাকা করে বিক্রি করছে। তবে আর কয়েকদিন পর যখন তালেরশাঁসগুলো একটু শক্ত হয়ে যাবে তখন এর দাম আরো কমবে।

উপজেলার তালশাঁস বিক্রেতা আব্দুল মান্নান জানান, তিনি প্রতিবছরই এই সময়ে তালের শাঁস বিক্রি করে সংসার চালান। গ্রাম অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তালফল ক্রয় করে গাছ থেকে পেরে এনে শাঁস বিক্রি করেন। তবে গাছ উঠে তাল ফলের বাঁধা গাছ থেকে পাড়া সবচেয়ে কষ্টকর একটি কাজ। বৈশাখ মাস থেকে জৈষ্ঠ্যের অর্ধেক পর্যন্ত এ দেড় মাস চলবে তালের শাঁস বিক্রির কাজ। প্রতিদিন প্রায় ১৫০থেকে ২০০শাঁস বিক্রি করা যায়। এতে তার প্রায় প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ হয়। তালের শাঁস বিক্রি করে চারজনের সংসার ভালই চলছে।

তালশাঁসের গুনাগুণ সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. একেএম ইফতেখারুল আরম খাঁন বলেন, তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দুর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-সি, এ, বি কমপে¬ক্সসহ নানা ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দুর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারহানা নাজনীন বলেন, এই এলাকায়  তাল গাছের বাণিজ্যিক কোন বাগান নেই। মানুষ সাধারণত বসত বাড়ী, রাস্তার পাশে তাল গাছ রোপন করে থাকেন। আবার চোখে পড়ে রেল লাইনের দু-পাশে। তালগাছ লম্বা হওয়ার কারণে বজ্রপাত প্রতিরোধে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সরকারি উদ্দ্যোগে কিংবা ব্যক্তিগত উদ্দ্যোগে বেশি বেশি করে তাল গাছ রোপনের কোন বিকল্প নেই। তবে বাণিজ্যিক ভাবেও তালগাছের বাগান গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ যেতে পারে। এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে, বজ্রপাত প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে এবং মৌসুম ভিত্তিক তালশাঁসের জন্য তালফল বিক্রি করেও অনেক টাকা আয় করা সম্ভব।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকার বাইরে বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই