তারিখ : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ট্রলারসহ নিখোঁজ মনপুরার ২০ জেলে

১৫ দিনেও সন্ধান মেলেনি বঙ্গোপসাগরে ট্রলারসহ নিখোঁজ মনপুরার ২০ জেলে
[ভালুকা ডট কম : ০৬ নভেম্বর]
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ১৫ দিন ধরে এমবি রনি-১ নামের একটি মাছ ধরা ট্রলারসহ ২০ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছে । শনিবার (৪ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে এমভি রনি-১ ট্রলারের মালিক মোঃ আক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ১৫ দিনেও সন্ধান না পাওয়ায় তাদের জীবন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে পরিবারের লোকজন। অনেকে মনে করছেন ঘূর্নিঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে তলিয়ে গেছে ট্রলারটি।

নিখোঁজ জেলেরা হলেন, এমভি রনি-১ ট্রলারের মাঝি জাহাঙ্গীর (৪০), শেখ ফরিদ (৫৫), সিদ্দিক (৪৫) ও শামীম (২৩) আলাউদ্দিন (৫৬), আবুল খায়ের (৬৫), বাতেন (৪০),ইয়াসিন (৩৫), জয়নাল আবেদীন (৭০), মিলন (৩৫), ইসলাম আলী (৫৫), ফিরোজ (৪৫), সোহাগ (৪৫), আলাউদ্দিন (৪১), সোহাগ আখন (৩৬), সুমন (৩০), আবুল কালাম (৬৪), আজাদ (৩৫), ইয়াকুব আলী (৬০), নুর র্সদার (৫৫)। এদের সবার বাড়ি মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অবস্থিত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২২ অক্টোবর রাতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের জন্য মনপুরা থেকে প্রায় অর্ধশত মাছ ধরা ফিসিং বোট সাগরে যায়। এসব মাছধরা ট্রলারের সাথে নিখোঁজ ট্রলারটিও মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের জনতা বাজার লঞ্চঘাট থেকে সাগরের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। নিখোঁজ ট্রলারটির মালিক দক্ষিণ সাকুচিয়া  ইউনিয়নের ৬নং ওর্য়াডের বাসিন্দা মৃত আমির হোসেন এর ছেলে মোঃ আক্তার হোসেন মাঝি। উক্ত নিখোঁজ এমভি রনি-১ ট্রলারটিতে মাঝিসহ মোট ২০ জন জেলে ছিলো। এরপর ২৫ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এর প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠলে অন্য মাছধরা ট্রলারগুলো নিরাপদে উপকূলে আসলেও ওই ট্রলারটি উপকূলে ফিরে আসেনি। ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’র পর থেকে ওই ট্রলারটির কোনপ্রকার খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। বা কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ট্রলারে থাকা মাঝিসহ সকল জেলেদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।

তবে গত ২৪ অক্টোবর  দিবাগত রাতে এমভি রনি-১ ট্রলারের মাঝি জাহাঙ্গীর এর সাথে অন্যান্য মাঝিদের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হয়। তখন সাগরে ড্রাম বয়ার কাছে মাছ শিকার করছিলো তারা। পরদিন ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এর প্রভাব শুরু হলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয় বলে জানায় মালিকপক্ষ। এদিকে নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে ট্রলার মালিক মোঃ আক্তার হোসেন এর ভাই আবুল হোসেন ও মনির এর দু’টি মাছধরা ট্রলার বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ জেলেদের খুঁজতে যায়। খোঁজাখুঁজি শেষে জেলেদের না পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ট্রলার দু’টি জনতা বাজার ঘাটে এসে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসি।

নিখোঁজের ঘটনায় শুক্রবার (৩ নভেম্বর) মনপুরা থানায় এসে নিখোঁজ ট্রলার এমভি রনি-১ এর মালিক মোঃ আক্তার হোসেন একটি সাধারন ডায়েরী করেন। স্বাভাবিকভাবে ৬/৭ দিনের মধ্যে মাছ ধরে কূলে ফিরি আসার নিয়ম থাকলেও ১৫ দিনেও ট্রলারসহ জেলেরা ফিরে না আসায় তাদের জীবন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিকে ২০ জেলে নিখোঁজের ঘটনায় জেলে পবিারগুলোতে শোকের মাতম বইছে। আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে জেলেদের আত্মীয়-স্বজনদের করুন আহাজারিতে।

নিখোঁজ জেলে শেখ ফরিদের স্ত্রী কুলসুম বেগম জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও মালিক পক্ষ সাগরে মাছ ধরার জন্য বাধ্য করে জেলেদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। নিখোঁজ জেলে বাতেনের স্ত্রী আকলিমা বলেন, সাগরে যাওয়ার পর থেকে আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ নাই। আমরা তাদের ফেরার অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছি।

বঙ্গোপসাগের নিখোঁজ ট্রলার এর পাশে থাকা শিপন মাঝি জানান, সাগরে বাতাস যখন বাড়ছে তখন রেডিও খুলে শুনি, সাত নাম্বার বিপদ সংকেত। সাথেসাথে নিখোঁজ ট্রলারের জাহাঙ্গীর মাঝিকে সাগরে পাতা জাল টেনে কুলে ফেরার কথা চিৎকার করে বলি। পরে আমরা জাল টেনে ঘাটের দিকি চলে আসি। পিছন থেকে আর সে ট্রলারটি দেখা মেলেনি। তবে অনেকের ধারণা, ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এর প্রভাবে সাগরে ট্রলারটি ডুবে যেতে পারে।

এদিকে উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ঘাটে অপেক্ষা করছেন নিখোঁজ জেলে পরিবারের সদস্যরা। উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ অলিউল্যাহ কাজল বলেন, আমি নিখোঁজ জেলেদের প্রত্যেকটা বাড়িতে গিয়ে খোজখবর নিয়েছি। এখন পর্যন্ত জেলেদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। আমাদের পক্ষ থেকে সকল প্রকার চেষ্টা চলছে। তবে আমি নিখোঁজ জেলেদের পরিবারের খোঁজ নিয়ে ফেরার পথে মটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর অবস্থায় বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছি।

এব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনর্চাজ মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজ জেলেদের সম্পর্কে মালিক পক্ষের কাছ থেকে জানতে পারলাম। সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে। নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে প্রয়োজনীয় খোঁজখবর ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এবং সব থানা ও কোস্টগার্ডকে আমাদের পক্ষ থেকে ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৯৩৯১ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই