তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

শাপলা তোলে জীবিকা নির্বাহ করে শতাধিকবার পরিবার

শ্রীপুরে শাপলা তোলে জীবিকা নির্বাহ করে শতাধিকবার পরিবার
[ভালুকা ডট কম : ০৬ সেপ্টেম্বর]
খুব ভোরে সকালে সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গে কাঠের তৈরী ছোট ডিঙি নৌকা অথবা তালগাছের তৈরী ডিঙ্গি কুষা নিয়ে দল বেঁধে বেড়িয়ে পড়েন হত দরিদ্র পরিবারে জন্ম উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নের ডুমনী গ্রামের শতাধিক মানুষ। পারুলী ও ডুমনী শাপলা বিল থেকে শাপলা সংগ্রহ করে। তারপর এই শাপলা প্রচন্ড প্রখর রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করে কেজি হিসেবে বিক্রি করেন। প্রতিদিন গড়ে দু-থেকে তিন ঘন্টা শাপলা তোলে বারতি আয়ের যোগান পান শতাধিক পরিবার।

শাপলার শুঁটকির চাহিদাও রয়েছে বেশ। বর্ষাকালে শাপলা ফুটার সাথে সাথে শাপলা বিক্রি করে অতিরিক্ত অর্থের যোগান হয় ডুমনী গ্রামের শতাধিক পরিবারের। কোন নৌকায় একজন আবার কোন নৌকায় দু'জনও থাকেন। ডুমনী গ্রামের আশপাশের সকল বিলে ফুটেছে প্রচুর লাল শাপলা। ডুমনী গ্রামের যে দিকে তাকানো যায় যতদুর চোখ যায় শাপলা আর শাপলা। এসব লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার হাজার পর্যটক আসেন এসব বিলে। আশপাশের মানুষের কাছে এসকল বিল শাপলা বিল নামে পরিচিত। পর্যটকদের কাছে শুধু আনন্দ আর সৌন্দর্যের মাধ্যম হলেও ডুমনী গ্রামের মানুষের কাছে এসকল শাপলা তাদের সংসারের অর্থনৈতিক চাহিদার অন্যতম মাধ্যম।

সরেজমিনে দেখা যায় ডুমনী গ্রামের পারুলী নদীর উপর নির্মিত পাগলা ব্রীজের উপর শাপলা রোদে শুকাতে দিয়েছে ইখলাস উদ্দিন। কথা হয় তাঁর সাথে। এখলাস উদ্দিন জানান তাঁর পরিবারের অসচ্ছলতার কথা। দুই ছেলে আর তিন মেয়ে তার পরিবারে বয়স হয়েছে মোটামুটি। তেমন কাজ করতে পারেন না। প্রতিদিন বিল থেকে শাপলা তোলে শুকান। কয়েকদিন পরপর পাইকাররা শাপলার শুঁটকি কিনতে আসেন। প্রতিকেজি শাপলার শুঁটকি বিক্রি হয় ৮০ টাকা থেকে ১শ টাকা পর্যন্ত।

একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে মো. রিয়াজুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে প্রতিদিন কাজের ফাঁকে ৩ঘন্টা সময় বিলে শাপলা তোলে বিক্রি করেন। শাপলা শুকানোর জন্য বিলের ধারে বাঁশের মাচা তৈরি করেছেন। তিনি প্রতি মৌসুমে শাপলা ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় করেন। একই মহল্লার ফজর আলী, সখিমন নেছা, আলতাফ হোসেন শাপলা তোলে শুঁটকি তৈরি করেন। একই গ্রামের রায় মোহন চন্দ্রের ছেলে অতুল চন্দ্র বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে ডিঙি নৌকা দিয়ে বড় বিলে শাপলা তোলেতে যায়। এবছর তিনি ১৪৫ কেজি শাপলার শুঁটকি বিক্রি করেছেন। তিনি প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ডুমনী গ্রামের বিভিন্ন বিলে শাপলার শুঁটকি বিক্রি করে ৪০ থেক ৫০হাজার টাকা আয় করেন।

শাপালা সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পর্যটক মামুন বলেন, ডুমনী গ্রামে আসলে হারিয়ে যায় সৌন্দর্যের নগরীতে। যতদুর চোখ যায় লাল শাপলা ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ে না। দেশের অনন্য পর্যটন কেন্দ্রের চাইতে ডুমনী গ্রামের সৌন্দর্য কোন অংশে কম নয়। মাহবুব সাবিনা দম্পতি বলেন, ডুমনী বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর কয়েকবার এখানে আসেন। নৌকা নিয়ে বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরবেন। এখানে ঘুরতে খুবই ভালো লাগে বলে জানান এই দম্পতি।

প্রহলাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হক আকন্দ বলেন, এই অঞ্চলের বিলগুলোতে প্রচুর পরিমাণ শাপলা ফুটে। এগুলো তোলার পর কেউ কেউ হয়তোবা বিক্রি করে থাকে এবিষয়ে আমার জানা নেই। তবে সরকারি সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা ইউনিয়নের নিন্ম আয়ের মানুষেকে দেয়া হচ্ছে।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

লাইফস্টাইল বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই