তারিখ : ৩১ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

যুব ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন

যুব ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন
[ভালুকা ডট কম : ০৯ ফেব্রুয়ারী]
দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত যুব ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। কোয়ার্টারে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা, সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। আর শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে ক্রিকেট দুনিয়াকে নতুন এক বার্তা দিয়ে রাখল জুনিয়র টাইগাররা।

আজ (রোববার) পচেফস্ট্রমে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলী। প্রথমে ব্যাট করে ৪৭.২ ওভারে ১৭৭ রানে অলআউট হয় ভারত। জবাবে ডার্ক লুইস পদ্ধতিতে ৪৬ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ৪২.১ ওভারে ১৭০ রান করে বাংলাদেশ।

ভারতকে জবাব দিতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ৮.৫ ওভারে দলীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও তানজিদ হাসান। কিন্তু এরপর ১৫ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। রবি বিশ্নয়ের ঘূর্ণিতে দ্রুত বিদায় নেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয় (৮), তৌহিদ হৃদয় (০) ও শাহাদাত হোসেন। এর আগে তানজিদকে (১৭) আউট করে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিও ভাঙেন তিনি। দলের দুঃসময়ে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার ইমন।

৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ধুঁকছে তখন অধিনায়কের মতোই দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন আকবর। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি শামীম হোসেন (৭) ও অভিষেক দাস (৫)। পরে পুনরায় ব্যাট হাতে ফিরে আসেন ইমন। আকবর-ইমনের ৪১ রানের জুটি ভাঙেন জসওয়াল। ৭৯ বলে ৭ চারে ৪৭ রান করে আকাশ সিংয়ের হাতে বন্দী হন ইমন। এরপর রাকিবুল হাসানকে নিয়ে মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন আকবর।ধীরে ধীরে যখন বাংলাদেশ জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন ৪১তম ওভারে বৃষ্টি নেমে আসে। যুবা টাইগারদের রান তখন ৭ উইকেটে ১৬৩। ৫৪ বলে দরকার তখন মাত্র ১৫ রান। ডার্ক লুইস পদ্ধতিতে তখনও বাংলাদেশ ১৮ রানে এগিয়ে ছিল। বৃষ্টি শেষে পুনরায় ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ডিএল পদ্ধতিতে তখন যুব টাইগারদের দরকার হয় ৩০ বলে ৭ রান। সেই রান নিতে কোনো বেগ হতে হয়নি বাংলাদেশকে। আকবরের ৭৭ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪৩ এবং রাকিবুলের ৯ রানের ইনিংসে ভর করে  অনায়াসেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় যুবা টাইগাররা।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের যুবাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। তানজিম হাসান সাকিব আর শরিফুল ইসলাম মিলে প্রথম ৬ ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ৮ রান। এরপর ৭ম ওভারে এসেই মেডেন ওভারের পাশাপাশি ১ উইকেট তুলে নেন অভিষেক। তবে প্রথম উইকেট হারানোর পর থেকেই উইকেট ধরে রাখায় মনোযোগ বাড়ায় ভারত। দুই ব্যাটসম্যান যশস্বী জসওয়াল ও তিলক ভার্মা মিলে উইকেট কামড়ে পড়ে থাকেন। এমনকি মাঝে ৫০ বলে কোনো বাউন্ডারিও হাঁকাননি তারা।

২৫ ওভারের পর থেকে রান তোলার দিকে ঝুঁকতে শুরু করে ভারত। তবে সাকিবের বলে তিলকের বিদায়ে বড় ধাক্কাই খায় তারা। শরিফুলে হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রান। এরপর দলীয় ১১৪ রানে প্রিয়মকে (৭) হারায় ভারত। ভারতের যুব অধিনায়ককে সাজঘরে ফেরান রাকিবুল হাসান। সতীর্থদের যাওয়া-আসার মাঝে মাটি লড়াই করতে থাকেন জসওয়াল। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে ১২ রান দূরে থাকতে শরীফুলের বলে তানজিদের হাতে বন্দী হন তিনি। তার ১২১ বলে ৮৮ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭ চার ও ১ ছক্কায়। জসওয়ালকে বিদায়ে দেওয়ার বলেই সিদ্ধেশ ভীরকে শূন্যহাতে সাজঘরে ফেরান শরীফুল। এরপর রানআউটের শিকার হয়ে বিদায় নেন উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেল (২২)। রান আউট হন রবিও (২)। এরপর অভিষেক এসে বোল্ড করেন অথর্বকে (৩)। কার্তিক তিয়াগিকে ডাক উপহার দিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন অভিষেক। এরপর শেষ উইকেট হিসেবে আউট হোন সুশান্ত মিশ্র (৩)। ১ রানে অপরাজিত ছিলেন আকাশ সিং।

শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে অনবদ্য ব্যাটিং করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে ৭৭ বলে ৫টি চার ও এক ছক্কায় ৪৩ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে ম্যান অব দ্য ম্যাচে পুরস্কার জেতেন বাংলাদেশের অধিনায়ক আকবর আলী।বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,আপনারা যারা আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা আমাদের দলের দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে কাজ করেছেন।

বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে নিজেদের এবং দেশের স্বপ্ন পূর্ণ করেছেন আকবররা। আর এর সবই সম্ভব হয়েছে কঠোর পরিশ্রমের কারণে। অধিনায়ক আকবরের ভাষ্যমতে, আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি আমাদের কোচিং স্টাফদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এটা শুধু সম্ভব হয়েছে আমাদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে।

যেকোনো ধরণের ক্রিকেটে এবারই প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো টাইগাররা। এর আগে জাতীয় দল হোক বা বয়সভিক্তিক, এমনকি মেয়েদের ক্রিকেটেও কখনো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে ঘরের মাটিতে আয়োজিত বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনাল খেলেছিল তারা। সেই সঙ্গে ভারতের উপর একটি প্রতিশোধও নিল যুব টাইগাররা। এই ভারতের বিপক্ষেই সর্বশেষ এশিয়া কাপের ফাইনালে ৫ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

খেলাধুলা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৯৩৯১ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই